কক্সবাজারে করোনায় শুক্রবার সর্বোচ্চ আক্রান্ত হওয়া ৬৮জন যে এলাকার

সিবি ◑

কক্সবাজার জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় শুক্রবার ডাক্তার,আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ,স্বাস্থ্য কর্মী,নার্স,এনজিও ডাক্তার,কর্মকর্তা এবং রোহিঙ্গা সহ সর্বোচ্চ ৬৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

এর আগের দিন ২৮ মে জেলায় একসঙ্গে ৫৯জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড করেছিল। মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ভেঙ্গেছে সে রেকর্ড। আর গত ৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে কক্সবাজারে এক মহিলা সহ ৭জন করোনা ও শ্বাসকষ্টে মৃত্যুবরণ করেছেন। আর আক্রান্তের দিক দিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে সদর উপজেলা।

জেলায় গত ৫৫দিন ধরে চকরিয়া উপজেলা এগিয়ে থাকলেও সেখানে গত কয়েকদিন ধরে আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তবে সদর উপজেলার মধ্যে পৌরসভা এখন হটস্পটে পরিণত হয়েছে।বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মিলে দুই দিনে ৮৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সবমিলে সদরে সংখ্যা এখন ২৫৯ জন। যা জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ল্যাব সূত্রে জানা যায়, ২৯ মে শুক্রবার পরীক্ষা করা ২৬৫টি নমুনার মধ্যে জেলায় ৬৮টির রিপোর্ট পজেটিভ আসে।

আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৪ জন সদর উপজেলায়, ৮জন উখিয়া উপজেলায়, ২ জন টেকনাফ উপজেলায় এবং ১ জন করে চকরিয়া, রামু, মহেশখালী উপজেলায়। এছাড়া এদিন এক রোহিঙ্গারও করোনা শনাক্ত হয়।

জানা গেছে, শুক্রবার সদরে যে ৫৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে তাদের মধ্যে ৫০ জনই কক্সবাজার পৌর এলাকার এবং সংখ্যায় প্রায় অর্ধেক নারী। আক্রান্তদের মধ্যে শহরের বদর মোকাম এলাকার ৩৫ ও ৪০ বছরের দুজন পুরুষ, রুমালিয়াড়ছড়ার ৩৫ ও ৪০ বছরের পুরুষ,কালুর দোকানের ৭৪ বছরের বৃদ্ধ,এন্ডারসন রোডের ৪৫ বছরের পুরুষ, বাদশাঘোনার ২৮ বছরের মহিলা, আইবিপি রোডের ৩০ বছরের পুরুষ,বিমান বন্দর সড়কের ৪৫ বছরের পুরুষ, গোলদীঘিপাড়ের ৩৪ বছরের পুরুষ, ঘোনার পাড়ার ৫৯ বছরের বৃদ্ধ, খুরুস্কুল সড়কের একটি টাওয়ারের ৩০ বছরের যুবক, বাস টার্মিনালের ২৫বছরের যুবক,উত্তর নুনিয়ারছড়ার ৪০ বছরের পুরুষ,নতুন বাহাড়ছড়ার ৩৩ বছরের পুরুষ, টেকপাড়ার ৩২ বছরের পুরুষ ও ৪০ বছরের নারী, নুনিয়ারছড়ার ৩৭ বছরের পুরুষ, ঘোনার পাড়ার ৫৪ বছরের পুরুষ,বড়বাজারের সালাম মার্কেটের ৬২ বছরের পুরুষ,মধ্যম নুনিয়ারছড়ার ২৮ বছরের পুরুষ,বড়বাজারের ৩০ বছরের পুরুষ, এসএম পাড়ার ৯ বছরের বালক,পুরুষ,মধ্যম নুনিয়ারছড়ার ১৮ বছরের কিশোরী,বাহাড়ছড়ার ৫৫ বছরের পুরুষ,লাইট হাউস পাড়ার ১২ বছরের বালিকা ও ৩৩ বছরের এক নারী।

এছাড়া কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ২৭ বছরের এক পুরুষ ও ৩৭ বছরের এক নারী ডাক্তার এবং সিভিল সাজন অফিসের ৩২ বছরের এক পুরুষ ডাক্তার এবং ২৫ ও ২৭ বছরের দুই নার্স রয়েছেন।শহরের বক্ষব্যাধি হাসপাতালেরও ৪০ বছরের এক পুরুষ কর্মী রয়েছেন।

এছাড়াও সদরের ঈদগাঁতে ৩০ বছরের যুবক ও খরুসউল পালপাড়ায় ৫৬ বছরের এক পুরুষ সহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নমুনা দেওয়া ২০ জনের অধিক নারী ও পুরুষ করোনা পজিটিভের তালিকায় রয়েছে। এই ৫৪ জন নিয়ে সদর উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াল ২৬১ জনে।

যা জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ।আর সুস্থ হয়েছেন ২২ জন এবং মৃত্যূবরণ করেছে ৯ জন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে উল্লেখিত পরিসংখানই বলে দেয় সদর উপজেলার মধ্যে পৌরসভাই এখন করোনার সংক্রমনের হটস্পট।

চকরিয়া প্রতিনিধি জানায়, শুক্রবার ৭০ বছরের এক নারীর করোনা শনাক্ত হয়।তবে তিনি রিপোর্ট আসার আগেই সকালে মৃত্যূবরণ করেন। এই একজন নিয়ে চকরিয়া উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াল ১৫৬ জনে।আর সুস্থ হয়েছে ৭০ জন এবং মৃত্যূররণ করেছে ১ জন।

উখিয়া প্রতিনিধি জানায়, শুক্রবার নমুনা পরীক্ষায় উখিয়ার স্থানীয় করোরেই করোনা শনাক্ত হয়নি।এদিন ৮জন যারা করোনা শনাক্ত হয়েছে তারা সবাই আন্তর্জাতিক সংস্থা আ্ইওএম এবং এমএসএফ এর।এর মধ্যে ৪ জন আইওএম এবং ৪ জন এমএসএফ‘র। আক্রান্তদের মধ্যে ২৫ এবং ৩০ বছরের দুজন মহিলা ডাক্তার রয়েছে। বাকী ৬জন কর্মকর্তা বা কর্মী। এছাড়া এ উপজেলায় এক রোহিঙ্গাও করোনা পজিটিভ হয়েছেন।

এনিয়ে উখিয়া উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াল ৮৬ জনে। যা জেলার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এছাড়া ৩০ রোহিঙ্গাও রয়েছে।

মহেশখালী প্রতিনিধি জানায়, মহেশখালীতে প্রথম দিকে করোনা বেশি শনাক্ত হলেও এখন অনেকাংশে কমে এসেছে। শুক্রবার ৪৮ বছরের এক পুরুষের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে।হয়েছেন। এনিয়ে এ উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াল ৩১ জনে।

টেকনাফ প্রতিনিধি জানায়, টেকনাফে গত ২৪ ঘন্টায় ১২ বছরের এক বালিকা ও ২৪ বছরের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর এক সদস্য করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এনিয়ে এ উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াল ২০ জনে।

রামু প্রতিনিধি জানায়, রামুতে প্রথম দিকে করোনা শনাক্ত না হলেও এখন আস্তে আস্তে বাড়ছে। বৃহস্পতিবারিএকদিনে ১২ জন শনাক্ত হওয়ার পর শুক্রবার মাত্র একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।তিনি মধ্যম মেরংলোয়ার ৩০ পুরুষ। এনিয়ে এ উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াল ২২ জনে।

এদিকে কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন ডা.মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, ২৯মে পর্যন্ত কক্সবাজার জেলার কেরোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬১৮ জন। বিভিন্ন হাসপাতালের আইসোলেশন (নিভৃতবাস) ইউনিটে ভর্তি রয়েছে ১০০ জন কভিড-১৯ রোগী। এছাড়া রোহিঙ্গা আইসোলেশন ইউনিটেও ৩০জন ভর্তি রয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৪২ জন। হোম কোয়ারেনটাইনে রয়েছেন ২৫৫জন। আর মারা গেছেন ১১ জন।